স্বাগতম,পাশে থকুন

youtube twitter facebook instagram

Proper Solutions

সর্বশেষ
খেলা বিনোদন প্রযুক্তি শিক্ষা চাকরি জীবনযাপন ভিডিও

আজ ‘আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস’ – জানুন ইতিহাস ও তাৎপর্য

আজ ‘আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস’ – জানুন এই দিবসের ইতিহাস, গুরুত্ব, বিশ্বব্যাপী উদযাপন পদ্ধতি এবং পরিবার গঠনের সামাজিক তাৎপর্য

ভিউ: ৫১

আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস ২০২৫ উদযাপন

পোস্ট আপডেট ১৫ মে ২০২৫   ৪ দিন আগে

বিশ্বব্যাপী পরিবারকে সমাজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হিসেবে গণ্য করা হয়। পরিবার ছাড়া সমাজের কাঠামো কল্পনা করা যায় না। পরিবারই আমাদের মূল্যবোধ, নৈতিকতা ও সংস্কৃতির প্রথম পাঠশালা। এই পরিবারের গুরুত্বকে স্বীকৃতি দিতেই জাতিসংঘ প্রতি বছর ১৫ মে তারিখে ‘আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস’ উদযাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আন্তর্জাতিক পরিবার দিবসের ইতিহাস

জাতিসংঘের ঘোষণা

আন্তর্জাতিক পরিবার দিবসের সূচনা হয় জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে। ১৯৮৯ সালে জাতিসংঘ এই দিবস প্রতিষ্ঠার জন্য সুপারিশ করে এবং ১৯৯৩ সালে ১৫ মে-কে "International Day of Families" হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে প্রতি বছর এই দিবসটি বিশ্বব্যাপী পালন করা হচ্ছে।

দিবস ঘোষণার পেছনের উদ্দেশ্য

এই দিবসটির মূল লক্ষ্য ছিল পরিবারগুলোর মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা, পারিবারিক বন্ধন জোরদার করা এবং পরিবার-ভিত্তিক নীতিমালাগুলোর গুরুত্ব তুলে ধরা। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে যেখানে পারিবারিক কাঠামো বিভিন্ন কারণে দুর্বল হয়ে পড়ছে, সেখানে এই দিবসটি বিশেষ তাৎপর্য বহন করে।

আন্তর্জাতিক পরিবার দিবসের তাৎপর্য

সামাজিক মূল্যবোধের প্রসার

পরিবারই শিশুদের মূল্যবোধ শেখার প্রথম কেন্দ্র। মা-বাবা, ভাই-বোনের সম্পর্কই শেখায় কিভাবে ভালোবাসা, দায়িত্ববোধ, সহনশীলতা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ গড়ে তুলতে হয়।

অর্থনৈতিক দিক

পরিবার অনেক ক্ষেত্রেই ক্ষুদ্র অর্থনৈতিক ইউনিট। তারা ব্যয়ের পরিকল্পনা করে, আয়-ব্যয় সামলে চলে, ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করে। একটি শক্তিশালী পরিবারই একটি শক্তিশালী জাতির ভিত্তি।

মানসিক স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা

পরিবারের ভালবাসা, সহানুভূতি ও সমর্থন মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে শিশুদের বেড়ে ওঠার সময় পরিবার একটি সুরক্ষিত আবরণ তৈরি করে।

বিশ্বব্যাপী উদযাপন পদ্ধতি

জাতিসংঘ ও বিভিন্ন রাষ্ট্রের ভূমিকা

জাতিসংঘ প্রতি বছর একটি নির্দিষ্ট থিম নির্ধারণ করে। যেমন ২০২৫ সালের থিম হতে পারে – "Families and Climate Action"। এই থিম অনুযায়ী দেশগুলো বিভিন্ন অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম আয়োজন করে।

পারিবারিক মিলনমেলা

বিভিন্ন দেশে পরিবার কেন্দ্রিক পিকনিক, মিলনমেলা, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং শিশুদের অংশগ্রহণে প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়।

মিডিয়া ও অনলাইন উদযাপন

আজকের ডিজিটাল যুগে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পরিবার দিবসকে কেন্দ্র করে ছবি শেয়ার, স্মৃতিচারণ, ভিডিও বার্তা ও ব্লগ পোস্ট শেয়ার করা খুবই জনপ্রিয়।

বাংলাদেশে পরিবার দিবস

সচেতনতা বাড়ছে

বাংলাদেশেও ধীরে ধীরে এই দিবসটির প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এনজিও, মিডিয়া হাউজ ও সরকারি দপ্তর দিবসটিকে কেন্দ্র করে নানা কার্যক্রম পালন করছে।

 বাস্তবতা ও চ্যালেঞ্জ

বাংলাদেশে এখনও যৌথ পরিবার থেকে একক পরিবারের দিকে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। কর্মব্যস্ততা, অর্থনৈতিক চাপ, এবং আধুনিক জীবনের চাহিদা পারিবারিক সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলছে।

 এই দিবসে করণীয়

  • পরিবারের সকল সদস্য একসাথে সময় কাটাতে পারেন

  • ছোট একটি পারিবারিক ভ্রমণ

  • মা-বাবা বা দাদা-দাদির সঙ্গে বসে পুরনো স্মৃতি রোমন্থন

  • পারিবারিক গল্প/ছবি/ভিডিও একসাথে দেখা

  • সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিবারের ছবি ও স্মৃতি শেয়ার

 পরিবার সম্পর্কে বিখ্যাত কিছু উক্তি

  • “পরিবার হচ্ছে প্রকৃতির একটি শ্রেষ্ঠ উপহার।” — জর্জ সান্তায়ানা

  • “আপনার পরিবারই আপনার প্রথম ও শেষ আশ্রয়।” — ব্রুস উইলিস

  • “শক্তিশালী সমাজের ভিত্তি হলো একটি সুখী পরিবার।” — ডেল কার্নেগি

পরিবারের গুরুত্ব চিরন্তন। আধুনিক সমাজের ব্যস্ত জীবনে আমরা অনেক সময় পরিবারকে অবহেলা করি। কিন্তু আজকের এই আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয়, পরিবারই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। তাই আসুন, এই দিনটিতে আমরা আমাদের পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাই এবং পারিবারিক বন্ধনকে আরো দৃঢ় করি।



কমেন্ট