ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদের দায়ের করা মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমনির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। আদালতে উপস্থিত না থাকায় পরীমনির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করা হয়েছে।

আজ রোববার ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আদালত এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পরীমনির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত।

একই মামলায় পরীমনির কস্টিউম ডিজাইনার জুনায়েদ বোগদাদী জিমির বিরুদ্ধেও অভিযোগ গঠন করা হয়েছে এবং তাঁর বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদের দায়ের করা মারধর ও হত্যার হুমকির মামলায় আজ অভিযোগ গঠনের দিন নির্ধারিত ছিল। চিত্রনায়িকা পরীমনির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সময় চেয়ে আবেদন করলেও আদালত তা নাকচ করে পরীমনির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন এবং আদালতে অনুপস্থিত থাকার কারণে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করেন।

এর আগে, গত বছরের ১৮ এপ্রিল পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে ঢাকার সিজেএম আদালত পরীমনিকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারি করেছিলেন।

২০২২ সালের ১৮ জুলাই ঢাকার আদালতে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ চিত্রনায়িকা পরীমনির বিরুদ্ধে মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে একটি নালিশি মামলা দায়ের করেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০২১ সালের ৮ জুন রাতে সাভারের বোট ক্লাবে পরীমনি ও তাঁর সহযোগীরা প্রবেশ করে ওয়াশরুম ব্যবহার করেন এবং পরে ক্লাবের ভেতরে বসে অ্যালকোহল পান করেন। রাত ১টা ১৫ মিনিটে ক্লাব ত্যাগ করার সময় পরীমনি নাসির উদ্দিনকে ডাকেন এবং ব্লু লেবেল অ্যালকোহলের একটি বোতল বিনামূল্যে দেওয়ার জন্য চাপ দেন। নাসির উদ্দিন রাজি না হলে পরীমনি তাঁকে গালমন্দ করেন এবং একপর্যায়ে একটি গ্লাস ছুড়ে মারেন, যা নাসির উদ্দিনের মাথা ও বুকে আঘাত করে।

পরীমনি ও জুনায়েদের বিরুদ্ধে পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদন

ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিনের দায়ের করা মামলাটি তদন্ত করে ২০২২ সালের এপ্রিলে পরীমনি এবং তাঁর কস্টিউম ডিজাইনার জুনায়েদ বোগদাদী জিমির বিরুদ্ধে প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

তদন্তে পিবিআই জানায়, জুনায়েদ বোগদাদী ব্যবসায়ী নাসিরকে মারধর করেছেন এবং পরীমনির ছোড়া মদের গ্লাসে নাসিরের আঘাত পাওয়ার বিষয়টি সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে।

পরীমনির মামলা ও তার অগ্রগতি
২০২১ সালের ৮ জুন সাভারের বিরুলিয়ায় অবস্থিত ঢাকা বোট ক্লাবে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে পরীমনি নাসির উদ্দিনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে সাভার থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে ২০২২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর নাসিরসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। মামলাটি ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯-এ বিচারাধীন রয়েছে এবং সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।

মাদক মামলায় পরীমনি
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আরেকটি মামলায় পরীমনি ও আরও দুই আসামির বিরুদ্ধে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এ বিচার চলছে। এই মামলাটিও বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।