যুক্তরাষ্ট্রে পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দেওয়ার তথ্য গোপন করার মামলায় দোষী সাব্যস্ত নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে শর্তহীন মুক্তি দিয়েছেন নিউইয়র্ক আদালত। আজ শুক্রবার বিচারক হুয়ান মারচান এ রায় ঘোষণা করেন। ট্রাম্পকে কারাদণ্ড বা জরিমানা না দিয়ে বিরল দণ্ড হিসেবে শর্তহীন মুক্তি দেওয়া হয়।

আগামী ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করতে চলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ মামলায় সর্বোচ্চ চার বছর কারাদণ্ড হতে পারত তাঁর। তবে শর্তহীন মুক্তির অর্থ হলো, দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরও তাঁর ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে না।

কী ঘটেছিল?

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে সাবেক পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের কথা গোপন রাখতে ট্রাম্প তাঁকে ঘুষ দেন। তবে এ ঘুষের অর্থ ব্যবসায়িক নথিতে উল্লেখ না করায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়। গত বছরের মে মাসে এ মামলায় ট্রাম্প দোষী সাব্যস্ত হন।

আজকের রায় ঘোষণার সময় বিচারক মারচান বলেন, ‘আমরা এমন একটি পরিস্থিতির মুখোমুখি, যা এর আগে কখনো দেখা যায়নি। দেশের সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তির ওপর হস্তক্ষেপ না করেই আইনগতভাবে এ রায় দেওয়া সম্ভব।’

ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া

রায় ঘোষণার সময় ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে ট্রাম্প বলেন, ‘এটি আমার জন্য এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতা। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এই মামলার মাধ্যমে আমাকে নির্বাচনে পরাজিত করার চেষ্টা করা হয়েছে।’

ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টি উচ্চ আদালতে আপিল করলেও তা খারিজ হয়ে যায়। তাঁর আইনজীবীর সাজা স্থগিতের আবেদনও নাকচ হয়।

প্রতিক্রিয়া

রায় ঘোষণার সময় ম্যানহাটানের আদালতের বাইরে জড়ো হয়েছিলেন ট্রাম্পের সমর্থক ও বিরোধীরা। একদিকে তাঁর সমর্থকেরা ব্যানার নিয়ে সমর্থন জানালেও বিরোধীরা ‘ট্রাম্প দোষী’ লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে প্রতিবাদ করেন।

অতীত কাণ্ড

এই রায়ের ঠিক চার বছর আগে, ৬ জানুয়ারি ২০২০ সালে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের আহ্বানে তাঁর সমর্থকেরা ক্যাপিটল হিলে হামলা চালিয়েছিলেন। তবে সে ঘটনায় করা মামলায় ট্রাম্পকে আদালত অব্যাহতি দিয়েছে।

এ রায় যুক্তরাষ্ট্রের বিচারিক ইতিহাসে বিরল এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে এটি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।