স্বাগতম,পাশে থকুন

youtube twitter facebook instagram

Proper Solutions

সর্বশেষ
বাংলাদেশ বিশ্ব খেলা বিনোদন প্রযুক্তি শিক্ষা চাকরি জীবনযাপন

সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত

রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করেছিলেন, হে আল্লাহর রাসুল, কোরআনের কোন সুরা সবচেয়ে বেশি মর্যাদাবান? তিনি বললেন, সুরা ইখলাস।

ভিউ: ১৯০

প্রধানমন্ত্রী ইভেন্ট ফটো

পোস্ট আপডেট ০৭ মার্চ ২০২৫   ২ মাস আগে

পবিত্র কোরআনের দ্বিতীয় সুরা হলো সুরা বাকারা। এ সুরার শেষ দুটি আয়াত (আয়াত ২৮৫-২৮৬) বিশেষ ফজিলত ও তাৎপর্যের অধিকারী।

এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! কোরআনের কোন সুরাটি সবচেয়ে বেশি মর্যাদাবান?’

তিনি উত্তর দিলেন, ‘সুরা ইখলাস।’

লোকটি আবার জিজ্ঞেস করলেন, ‘কোরআনের কোন আয়াতটি সবচেয়ে মর্যাদাবান?’রাসুল (সা.) বললেন, ‘আয়াতুল কুরসি।’

এরপর ব্যক্তি আবার জানতে চাইলেন, ‘হে আল্লাহর নবী! কোন আয়াতটি আপনি বেশি পছন্দ করেন, যা আপনার উম্মতের জন্য কল্যাণকর?’ নবীজি (সা.) বললেন, ‘সুরা বাকারার শেষ দুটি আয়াত।’

সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াতের অবতরণ

সহিহ মুসলিম শরিফে বর্ণিত আছে যে, ‘এ দুটি আয়াত রাসুল (সা.)-কে মিরাজের রাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সঙ্গে আসমানে দান করা হয়েছে।’

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন—

‘যখন আমাকে সিদরাতুল মুনতাহায় নিয়ে যাওয়া হয়, তখন তিনটি জিনিস দান করা হয়:
১. পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ
২. সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত
৩. উম্মতের মধ্যে যারা শিরক করে না, তাদের কবিরা গুনাহ মাফ হওয়ার সুসংবাদ।’
(মুসলিম, তাফসিরে মাজহারি)

হে আল্লাহর নবী, আপনি কোন আয়াতটি পছন্দ করেন, যাতে আপনার উম্মত লাভবান হবে। নবীজি (সা.) বললেন, সুরা বাকারার শেষ দুটি আয়াত।

আয়াত দুটো উচ্চারণ

"আমানার রাসুলু বিমা উনঝিলা ইলাইহি মিররাব্বিহি ওয়াল মুমিনুন। কুল্লুন আমানা বিল্লাহি ওয়া মালা ইকাতিহি ওয়া কুতুবিহি ওয়া রুসুলিহি লা নুফাররিকু বাইনা আহাদিমমির রুসুলিহি। ওয়া কালু সামিনা ওয়া আতানা গুফরানাকা রাব্বানা ওয়া ইলাইকাল মাসির। লা ইউকাল্লিফুল্লাহু নাফসান ইল্লা উসআহা-লাহা মা কাসাবাত ওয়া আলাইহা মাকতাসাবাত-রাব্বানা লা তুআখিজনা ইন-নাসিনা আও আখতানা-রাব্বানা ওয়া লা তাহমিল আলাইনা ইসরান কামা হামালতাহু আলাল্লাজিনা মিং ক্বাবলিনা- রাব্বানা ওয়া লা তুহাম্মিলনা মা লা তাকাতা লানা বিহি-ওয়াফু আন্না ওয়াগফিরলানা ওয়ারহামনা- আংতা মাওলানা ফাংসুরনা আলাল কাওমিল কাফিরিন।’ (সুরা বাকারা: আয়াত ২৮৫-২৮৬)


এ দুটি আয়াতের অর্থ হলো—


‘তার প্রতিপালকের কাছ থেকে যা অবতীর্ণ হয়েছে রাসুল তার ওপর বিশ্বাস করে আর বিশ্বাসীরাও। তারা সকলেই বিশ্বাস করে আল্লাহয়, তাঁর ফেরেশতাগণে, তাঁর কিতাবগুলোয় ও তাঁর রাসুলদের ওপর (এবং তারা বলে,) আমরা তাঁর রাসুলদের মধ্যে কোনো পার্থক্য করি না। আর তারা বলে, আমরা শুনি ও মানি। হে আমাদের প্রতিপালক, আমরা তোমার নিকট ক্ষমা চাই, আর তোমার কাছেই আমরা ফিরে যাব।’ আল্লাহ্ কাউকেই তার সাধ্যের অতিরিক্ত দায়িত্বভার দেন না। ভালো ও মন্দ যে যা উপার্জন করবে তা তারই। (তোমরা প্রার্থনা করো,) হে আমাদের প্রতিপালক! যদি আমরা ভুলে যাই বা ভুল করি তবে তুমি আমাদেরকে অপরাধী কোরো না। হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের পূর্ববর্তীদেরকে যে ভারী দায়িত্ব দিয়েছিলে আমাদের ওপর তেমন দায়িত্ব দিয়ো না। হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি এমন ভার আমাদের ওপর দিয়ো না যা বইবার শক্তি আমাদের নেই। আর আমাদের পাপ মোচন করো, আর আমাদেরকে ক্ষমা করো, আর আমাদের ওপর দয়া করো, তুমি আমাদের অভিভাবক। অতএব অবিশ্বাসী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে তুমি আমাদের জয়যুক্ত করো।’ (সূত্র: কোরানশরিফ: সরল বঙ্গানুবাদ, মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, প্রথমা প্রকাশন, ২০২০)


আরও ফজিলত

সুরা বাকারার শেষ দুটি আয়াতের মাহাত্ম্য সম্পর্কে বহু হাদিসে আলোচনা করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, “যে ব্যক্তি রাতে এই দুই আয়াত তিলাওয়াত করবে, তার জন্য এটি যথেষ্ট হবে।”

হজরত জুবাইর ইবনু নুফাইর (রা.) বর্ণনা করেন যে, নবী (সা.) বলেছেন, সুরা আল-বাকারার শেষ দুটি আয়াত আল্লাহ এমন এক বিশেষ ভান্ডার থেকে দান করেছেন, যা তাঁর আরশের নিচে সংরক্ষিত রয়েছে। অতএব, তোমরা এগুলো শিখে নাও এবং তোমাদের স্ত্রীদেরও শেখাও। কারণ, এই আয়াতগুলো রহমত, আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাধ্যম এবং সর্বপ্রকার কল্যাণ লাভের দোয়া। (মিশকাতুল মাসাবিহ: ২১৭৩)

বিশেষ ফজিলত

হজরত আবু মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি রাতে এই দুটি আয়াত তিলাওয়াত করবে, তার জন্য এটিই যথেষ্ট।” অর্থাৎ রাতে কোরআন তিলাওয়াতের যে দায়িত্ব রয়েছে, অন্তত সুরা বাকারার শেষ দুটি আয়াত পাঠ করলে সেটার কিছু অংশ পূরণ হবে। (বুখারি: ৪০০৮)

হজরত আলী (রা.) বলেছেন, “আমার মতে, যার সামান্যতম বুদ্ধি-বিবেক আছে, সে কখনো এই দুটি আয়াত তিলাওয়াত ছাড়া ঘুমাবে না।” এই আয়াত দুটি নিয়মিত পড়লে বিপদ-আপদ দূর হয় এবং জান্নাতের পথ সুগম হয়।




কমেন্ট