কুরবানির ঈদে মুক্তি পাচ্ছে শাকিব খানের তাণ্ডব সিনেমা, রোমাঞ্চকর সাসপেন্স থ্রিলার যা ভাঙতে পারে সব রেকর্ড
ভিউ: ৫৬
পোস্ট আপডেট ২৩ মে ২০২৫ ১৫ ঘন্টা আগে
বাংলাদেশের চলচিত্র অঙ্গনে ঈদ মানেই নতুন সিনেমার উৎসব, আর এই উৎসবের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন সুপারস্টার শাকিব খান। এবারের ঈদুল আজহায় যে সিনেমাটি নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে, সেটি হলো “তাণ্ডব”। শাকিব খান, জয়া আহসান ও সাবিলা নূর অভিনীত এই চলচ্চিত্রটি একটি অ্যাকশন-থ্রিলার, যা দেশের সিনেমা প্রেমীদের মাঝে রীতিমতো আগ্রহের ঝড় তুলেছে।
‘তাণ্ডব’ সিনেমার কাহিনি, নির্মাণ, অভিনয়, এবং এর মাধ্যমে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের কী ধরণের রূপান্তর ঘটতে যাচ্ছে।
অ্যাকশন-থ্রিলার কি ছিলো
আগামী ঈদুল আযহায় মুক্তি পেতে যাচ্ছে শাকিব খানের নতুন ছবি তাণ্ডব। ছবিটির টিজার প্রকাশের মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এটি এক কোটি ভিউ ছাড়িয়ে গেছে।
ঢালিউডের সুপারস্টার শাকিব খান ক্রমাগত দর্শকদের নতুন নতুন চমক উপহার দিচ্ছেন। ‘তুফান’ এবং ‘বরবাদ’ সিনেমার মাধ্যমে রোমান্টিক হিরো থেকে নিজেকে দূরে রেখে ব্যাড বয় ইমেজে নতুন মাত্রা যোগ করেছেন তিনি। এবার দর্শকরা অপেক্ষা করছেন তাঁর নতুন সাসপেন্স থ্রিলার তাণ্ডব সিনেমার জন্য। টিজারটি ইতিমধ্যেই দর্শকদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি করেছে এবং মাত্র একদিনেই এক কোটি ভিউ পার করেছে।
রায়হান রাফি পরিচালিত এই ছবিতে শাকিব খানের সঙ্গে অভিনয় করেছেন প্রতিভাবান অভিনেত্রী জয়া আহসান এবং রজিস সিদ্দিকীসহ আরও গুণী শিল্পীরা। সিনেমাটি আশা করা হচ্ছে বাংলা চলচ্চিত্রের নতুন ইতিহাস রচনা করবে এবং সব ধরণের রেকর্ড ভাঙবে।
‘তাণ্ডব’ একটি সন্ত্রাস-প্রতিরোধমূলক থ্রিলার ঘরানার সিনেমা। ছবির কাহিনী আবর্তিত হয়েছে একটি টেলিভিশন চ্যানেলের ওপর সন্ত্রাসী হামলা এবং সেখান থেকে বেরিয়ে আসা সত্যের অনুসন্ধান ঘিরে।
শাকিব খান এই ছবিতে অভিনয় করছেন একজন সাহসী গোয়েন্দা কর্মকর্তার ভূমিকায়, যিনি আত্মত্যাগ, দেশপ্রেম এবং ন্যায়বিচারের মিশ্রণে গড়া এক জটিল চরিত্র। বিপরীতে জয়া আহসান একজন সাংবাদিকের ভূমিকায় রয়েছেন, যিনি চ্যানেলটিতে কর্মরত এবং ধীরে ধীরে জড়িয়ে পড়েন সত্য উদঘাটনের লড়াইয়ে। এদিকে, সাবিলা নূরকে দেখা যাবে একটি চমৎকার ক্যারেক্টার রোল-এ, যিনি গল্পে আবেগ ও নাটকীয়তা যোগ করেছেন।
২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে রায়হান রাফি পরিচালিত বহুল প্রতীক্ষিত ছবি ‘তাণ্ডব’-এর চিত্রগ্রহণ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও নানা জটিলতায় তা বিলম্বিত হয়। অবশেষে ২৪ মার্চ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ছবিটির মূল চিত্রগ্রহণ শুরু হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন পরিচালক নিজেই, এক সাক্ষাৎকারে কালের কণ্ঠকে।
চিত্রগ্রহণের অগ্রগতির ব্যাপারে এপ্রিলের শেষ দিকে জানা যায়, ছবির প্রায় ৭০ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন লোকেশনে শুটিংয়ের পর এবার সিনেমার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ—একটি গানের দৃশ্য এবং ক্লাইম্যাক্স অ্যাকশন সিকোয়েন্সের কাজ শুরু হয়েছে শ্রীলঙ্কায়।
১৬ এপ্রিল শ্রীলঙ্কার উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন চিত্রনায়ক শাকিব খান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ছবির অন্যতম অভিনেত্রী সাবিলা নূর এবং সিনেমার কারিগরি দলের সদস্যরা। জানা গেছে, তারা এক সপ্তাহের জন্য শ্রীলঙ্কায় অবস্থান করবেন এবং সেখানে ছবির চূড়ান্ত অ্যাকশন দৃশ্যগুলো ধারণ করা হবে। ছবিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান থেকে জানানো হয়েছে, আধুনিক প্রযুক্তি ও ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট ব্যবহারের জন্যই এই আন্তর্জাতিক লোকেশন বেছে নেওয়া হয়েছে।
‘তাণ্ডব’ ছবির এই অগ্রগতি দেখে চলচ্চিত্র অঙ্গনে ইতিমধ্যেই বেশ আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। ছবিটি নিয়ে দর্শক মহলেও প্রত্যাশার পারদ এখন তুঙ্গে। সাসপেন্স ও থ্রিলার ঘরানার এ ছবিতে প্রথমবার শাকিব খানকে ভিন্ন এক ব্যতিক্রমী লুকে দেখা যাবে বলে জানানো হয়েছে।
‘তাণ্ডব’ ২০২৫ সালের ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশের প্রায় ১০০+ সিনেমা হলে একযোগে মুক্তি পাচ্ছে। ছবিটির ট্রেলার মুক্তির পর থেকেই ইউটিউব এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লক্ষাধিক ভিউ হয়েছে।
বাংলাদেশের চলচিত্রাঙ্গনে সাম্প্রতিক সময়ে অন্যতম আলোচিত নাম হচ্ছে “তাণ্ডব (Taandob)”। শুধু তারকাবহুল অভিনয় নয়, এই সিনেমার নির্মাণ ও পরিচালনাতেও রয়েছে একদল প্রতিশ্রুতিশীল এবং অভিজ্ঞ মানুষের নিখুঁত প্রচেষ্টা, যা ছবিটিকে করেছে ব্যতিক্রমী ও গুণগত মানে অনন্য।
রায়হান রাফি মূলত তার সৃজনশীল চিন্তা ও সাহসী গল্প বলার কৌশলের জন্য পরিচিত। তার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘তুফান’ (২০২৪) ব্যাপক সাফল্য অর্জন করে, যা তাকে দেশের টপ-লেন নির্মাতাদের মধ্যে জায়গা করে দেয়। পরবর্তীতে ‘তাণ্ডব’ সিনেমায় তিনি আবারও তার দক্ষতা প্রদর্শন করছেন।
তাণ্ডব পরিচালনা করেছেন রায়হান রাফি, যিনি বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের চলচ্চিত্র নির্মাতাদের মধ্যে অন্যতম আলোচিত ও জনপ্রিয় নাম। তার নির্মাণে থাকে গল্পের গভীরতা, চরিত্রের বাস্তবতা ও ভিজ্যুয়াল স্টাইলিংয়ের অপূর্ব মিশ্রণ।
‘তাণ্ডব’ সিনেমায়ও রাফি তাঁর স্বভাবসুলভ স্টাইল বজায় রেখেছেন — সমাজ, রাষ্ট্র এবং রাজনীতিকে একসূত্রে গেঁথে একটি অ্যাকশন-থ্রিলার গল্প উপস্থাপন করেছেন। এই সিনেমায় তিনি ট্র্যাডিশনাল কমার্শিয়াল ধারার বাইরে এসে গল্পের প্রতি ফোকাস দিয়েছেন এবং সিনেমাটিকে আন্তর্জাতিক মানের একটি থ্রিলার হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টায় সফল হয়েছেন।
‘তাণ্ডব’ সিনেমাটি নির্মাণ করেছে আলফা-আই প্রোডাকশন এবং ভারতের অন্যতম বড় প্রোডাকশন হাউজ SVF (Shree Venkatesh Films)। এই যুগ্ম প্রযোজনার মাধ্যমে বাংলাদেশি সিনেমায় প্রথমবারের মতো ভারতের প্রভাবশালী প্রযোজনা সংস্থা সরাসরি যুক্ত হলো, যা এই সিনেমাকে দিয়েছে আন্তর্জাতিকতর পরিচিতি।
এছাড়া, সিনেমাটির ডিস্ট্রিবিউশন ও মার্কেটিং স্ট্রাটেজি পুরোপুরি পরিকল্পিতভাবে সাজানো হয়েছে — ঈদ কেন্দ্রিক ব্যবসায়িক সফলতা ছাড়াও আন্তর্জাতিক রিলিজ ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মেও মুক্তি দেওয়ার লক্ষ্য রয়েছে।
চিত্রগ্রহণ পরিচালক (DOP): কামরুল হাসান খোরশেদ
এডিটিং: এম এ রবিন
সাউন্ড ডিজাইন: ইশরাত জাহান
কালার গ্রেডিং: সম্পন্ন হয়েছে দক্ষিণ ভারতের একটি স্টুডিওতে, যা সিনেমার ভিজ্যুয়ালকে করেছে আরও প্রফেশনাল ও গ্ল্যামারাস।
সব মিলিয়ে, ‘তাণ্ডব’ সিনেমা প্রমাণ করে যে গুণগত নির্মাণ, দক্ষ পরিচালনা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলা সিনেমা এখন বিশ্বমানের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
‘তাণ্ডব’ সিনেমাটি দর্শকদের মুগ্ধ করেছে তার অভিনয়ের মাধ্যমে। এই ছবিতে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে এক অনবদ্য কাস্ট, যারা তাদের অভিনয়ের জাদুতে গল্পের আবেগ ও উত্তেজনা ফুটিয়ে তুলেছেন।
বাংলা সিনেমার কিংবদন্তি অভিনেতা শাকিব খান এখানে একজন কঠোর সরকারি কর্মকর্তার চরিত্রে অভিনয় করেছেন। শাকিবের অভিনয় খুবই প্রাঞ্জল ও বাস্তবসম্মত, যা দর্শকদের সঙ্গে গভীর সংযোগ তৈরি করেছে। তার চেহারা ও সংলাপচালনা চরিত্রের সঙ্গে পুরোপুরি মানানসই, এবং অ্যাকশন দৃশ্যে তার উপস্থিতি সিনেমার উত্তেজনা বাড়িয়েছে।
জয়া আহসান তার কেরিয়ারের মধ্যেও একটি শক্তিশালী এবং গভীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তার চরিত্র একজন নির্ভীক সাংবাদিক, যিনি সত্যের অনুসন্ধানে থাকেন। জয়ার আবেগপূর্ণ মimikry এবং সংলাপ বলার ধারা দর্শকদের আবেগে কাঁপিয়েছে।
সাবিলা নূরের অভিনয় সিনেমার গল্পে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তার চরিত্রের মাধ্যমে গল্পে এসেছে এক টানটান নাটকীয়তা, যা দর্শকদের আগ্রহ ধরে রাখে। সাবিলা অত্যন্ত প্রাঞ্জল অভিনয় দ্বারা চরিত্রের গভীরতা ফুটিয়ে তুলেছেন।
‘তাণ্ডব’ ২০২৫ সালের ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশের প্রায় ১০০+ সিনেমা হলে একযোগে মুক্তি পাচ্ছে। ছবিটির ট্রেলার মুক্তির পর থেকেই ইউটিউব এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লক্ষাধিক ভিউ হয়েছে।
এই সিনেমা আন্তর্জাতিকভাবে রিলিজের জন্যও পরিকল্পনা করা হচ্ছে — যেমন: লন্ডন, নিউইয়র্ক, মালয়েশিয়া, দুবাই ও কলকাতা।
Copyright © NRS IT 2025